Posts

Showing posts with the label হিন্দুধর্ম

নারী ও পৌরহিত্ব: ধর্মীয় ও সামাজিক দৃষ্টিকোণ

Image
মেয়েরা পৌরোহিত্য করতে পারে এর একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ  লক্ষ করা  যায় যে, হিন্দুধর্ম নিজেই নারীদের পুরোহিত হওয়ার অনুশীলনকে নিষিদ্ধ করে না; এমন কোন ধর্মগ্রন্থ নেই যা এটাকে অস্বীকার করে। প্রকৃতপক্ষে, প্রাচীন বৈদিক যুগে, নারীরা জ্ঞান অর্জনে পুরুষদের মতো সমান স্বাধীনতা উপভোগ করতে পরিচিত ছিল: তারা বেদও অধ্যয়ন করেছিল।" কেরালার অমৃতানন্দময়ী মঠের দুর্গা মন্দির এবং ঈশা যোগ কেন্দ্রের লিঙ্গ ভৈরবী মন্দিরে মহিলা পুরোহিত রয়েছে৷ এগুলিকে এমনভাবে পবিত্র করা হয় যে শুধুমাত্র মেয়েলি শক্তি শক্তি বজায় রাখতে পারে। তদুপরি, অমৃতানমদময়ী মঠের সন্ন্যাসী (ব্রহ্মচারিণী) হোম কুন্ডের সাথে নেতৃত্ব দেন এবং পূজা করেন। যেমন কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। নারী ও পৌরহিত্ব এই প্রশ্নের উত্তের একটি আকর্ষণীয় উত্তর দিয়েছেন মা সদগুরু।একদিন আমার মা সদগুরুর কথা শুনছিলেন যেখানে তিনি বলেছিলেন, মহিলারা হয়তো পুরুষদের রক্ষণাবেক্ষণ করছে! ঐতিহ্যগুলি ইতিহাসের একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে এবং প্রেক্ষাপটে বিবর্তিত হয়েছে। এটি অবশ্যই এমন কিছু নয় যা আমি অন্ধভাবে স্বীকার করব। পুরুষদের বজায় রাখার মতো কিছু নেই। নারীদে...

বৈষ্ণব নিন্দা করা কি পাপ? এর আধ্যাত্মিক প্রভাব জানুন!

Image
আপনার নিজের মনের ভুলেও কখনো বৈষ্ণবদের নিন্দা করবেন না কারণ কিছু কিছু পাপের কখনো ক্ষমা হয় না আর এই পাপগুলোর মধ্যে বৈষ্ণব নিন্দা করা একটি পাপ অন্যতম।উদাহরণ হিসেবে বলা যায়  বৈষ্ণব নিন্দা করলে আপনি শুদ্ধ উচ্চারণ করতে ব্যর্থ হবেন। তাই আমাদের সকলকে সতর্ক থাকতে হবে যেন আমরা কখনো বৈষ্ণবদের নিন্দা বা ঘৃনার চোখে না দেখি। চলুন, বৈষ্ণব নিন্দা নিয়ে বিস্তারিত ধর্মীয় আলোচনা জেনে নেওয়া যাক। বৈষ্ণব নিন্দা চার প্রকারের হয়ে থাকে। যথাঃ- ১/নীচকুলোদ্ভুত বলে নিন্দা করা এটি বৈষ্ণব নিন্দার প্রথম ধাপ। ২/পূর্বের দোষের দরুন নিন্দা করা এটি বৈষ্ণব নিন্দার দ্বিতীয় ধাপ। ৩/আকস্মিক দোষের জন্য নিন্দা করা এটি বৈষ্ণব নিন্দার তৃতীয় ধাপ। ৪/প্রায় দোষমুক্ত অবস্থায় নিন্দা করা এটি বৈষ্ণব নিন্দার সর্বশেষ ধাপ। বৈষ্ণব নিন্দা করা কি পাপ শ্রীহরিনাম চিন্তামণি বলেছেন এসব গুরুতর বৈষ্ণব অপরাধ। প্রায় ক্ষমার অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত। জাতি, ধর্ম বা বর্ণ নির্বিশেষে, প্রতিটি ভক্তেরই উচিত অন্য ভক্তের প্রশংসা করা—এটাই একজন সত্যিকারের ভক্তের প্রধান কর্তব্য। কাউকে কখনো উপহাস করা ঠিক নয়। যেন কোনো ভক্তের প্রতি আমরা কোনো অপরাধ না করি, সে ...

গণেশষষ্টোত্তর শতনাম স্তোত্রম্ – ১০৮ নাম সহ পাঠ ও গুরুত্ব

Image
শ্রীশ্রীগণেশ, শিব ও দুর্গা। গণেশের প্রণাম মন্ত্র-(ও) দেবেন্দ্র মৌলিমন্দার মকরন্দকণারুণাঃ নিম্নং হরন্তু হেরম্বং চরণাম্বুজরেণবঃ। ভিন্ন প্রকার-একদন্তং মহাকায়ং লম্বোদরং গজাননম্। বিঘ্নবিনাশকং দেবং হেরম্বং প্রণমাম্যহম্। গণেশের ধ্যান-খর্ব্ব স্থূলতনুং গজেন্দ্রবদনং লম্বোদরং সুন্দরং, প্রসান্দম্মদগন্ধ-লুব্ধ-মধুপ-ব্যালোল গণ্ডস্থলম্। দস্তাঘাতবিদারিতারি-রুধিরৈঃ সিন্দুর শোভাকরং, বন্দে শৈলসুতাসূতং গণপাতিং সিদ্ধিপ্রদং কামদম্।। গণেশষষ্টোত্তর শতনাম স্তোত্রম্ মন্ত্র-(ও) গাং গণেশায় নমঃ। বীজ মন্ত্র-গাং। গণেশোষ্টোত্তর-শতনাম-স্তোত্রম্ যম উবাচ। গণেশ হেরম্ব গজাননেতি মহোদয় স্বানুভব প্রকাশিন। বরিষ্ঠ সিদ্ধিপ্রিয় বুদ্ধিনাথ বদন্তমেবং ত্যজত প্রভীতাঃ ॥১॥ অনেকবিঘ্নান্তক বক্রতুণ্ড স্বসঙ্গবাসিংশ্চ চতুর্ভুজেতি। কবীশ দেবাস্তকনাশকারিন বদস্তমেবং ত্যজত প্রভীতাঃ ॥২॥ মহেশসুনো গজদৈত্যশত্রো বরেণ্যসুনো বিকট ত্রিনেত্র। পরেশ পৃথ্বীধর একদন্ত বদস্তমেবং ত্যজত প্রভীতাঃ ॥৩॥ প্রমোদ মোদেতি নরান্তকারে যডুর্মিহন্তর্গজকর্ণটুণ্ডে। দ্বন্দ্বারিসিদ্ধো স্থিরভাবকারিন বদন্তমেবং ত্যজত প্রভীতাঃ ॥৪॥ বিনায়ক জ্ঞানবিঘাতশত্রো পরেশ শর্ব্বায়জ বিষ্ণুপুত্র। অন...

"সতীর দেহত্যাগ ও একান্ন শক্তিপীঠ: পৌরাণিক কাহিনী, ইতিহাস ও তাৎপর্য

Image
আদ্যা শক্তি মহামায়া কে কন্যা রূপে পাওয়ার জন্য ব্রহ্মার পুত্র দক্ষ প্রজাপতি শুরু করেছিলেন এক কঠিন তপস্যা। আর এই তপস্যায় তুষ্ট হয়ে মহামায়া দক্ষ প্রজাপতির ঘরে অপরূপ এক কন্যা রূপে আসবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিলেন কিন্তু যদি কোনদিন কোনরকমভাবে তাঁর অনাদর হয়, তিনি দেহত্যাগ করবেন। কার্যতঃ- হলোও তাই। দক্ষনন্দিনী সতীর বিবাহ হলো দেবাদিদেব মহাদেবের সঙ্গে। দক্ষের প্রবল অহঙ্কার আধিপত্যের জন্য মহাদেবের সঙ্গে হলো দক্ষের বিবাদ। একবার দক্ষ বিরাট এক যজ্ঞের আয়োজন করেন। সেই অনুষ্ঠানে নিজ কন্যা ও জামাতাকে তিনি আমন্ত্রণ জানালেন না। কিন্তু সতী পিতৃগৃহে এতবড় যজ্ঞের আয়োজন শুনে যাবার জন্য ব্যস্ত হয়ে উঠলেন। মহাদেবের প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও সান্তী সেই যজ্ঞানুষ্ঠানে হাজির হলেন। দীর্ঘদিন পর পিতা পুত্রী সাক্ষাৎ হলেও দক্ষ নিজ কন্যাকে কোন আদর আপ্যায়ণ করলেন না, পরন্ত শিব নিন্দায় মুখর হয়ে উঠলেন। পিতার মুখে এরূপ স্বামী নিন্দা সহ্য করতে না পেরে সতী দেহত্যাগ করলেন। এদিকে মহাদেব সতীর দেহত্যাগের সংবাদে প্রচণ্ড ক্ষুত্ত হয়ে নিজের জটাজাল ছিন্ন করে সৃষ্টি করলেন শক্তিশালী বীরভদ্রকে। বীরভদ্র মহাদেবের নির্দেশে লণ্ডভণ্ড করলেন দক্ষে...

পূর্ব জন্মের কর্মফল কি সত্য? হিন্দু শাস্ত্র ও বিজ্ঞানের দৃষ্টিভঙ্গি

Image
যদি কেউ পূর্বজন্মে পাপকর্ম করে থাকে, তাহলে এই জন্মে বা পরের জন্মে তার কষ্টভোগ করতেই হবে।কথায় আছে যেমন কর্ম তেমন ফল । বেদান্তসূত্রে বলা হয়েছে, জগৎকে সৃষ্টির জন্য ব্রহ্মকেও জীবের কর্মফলের অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে। আমাদের সাধারণ জীবনযাপনে দেখা যায় অনেকেই নানা পদ্ধতিতে শ্রমের দ্বারাও জীবনে সুখের সন্ধান পেতে পারে না আবার অন্যদিকে কেউ কেউ বিনা পরিশ্রমেই অনেক শ্রমের ফল ভোগ করে। উপনিষদে বলা হয়েছে ভাল কাজ করলে পুণ্য আর পাপ কাজ করলে মন্দ ফল ভোগ করতে হয়। পূর্ব জন্মের কর্মফলেই ইহলোক ও পরলোক প্রাপ্তির প্রধান কারণ হিসাবে মনে করা হয়। দেহত্যাগের পর যারা খুব পুন্যবান তারা চন্দ্রালোকে যান সুখ ভোগ করতে, আর পাপী আত্মাদের গন্তব্য হয় যমলোকে। পূর্ব জন্মের কর্মফল পূর্ব জন্মের কর্মফল: পাপ-পুণ্যের ফল কীভাবে ভোগ করি পরের জন্মে? কোন পাপের ফল পরের জন্মে কীভাবে পাবেন হিন্দু পুরাণ বলছে, মানুষ যতই চেষ্টা করুক না কেন, কর্মফল কখনওই বর্তমান জন্মে ভোগ করা যায় না। ভাল-খারাপ দুই ধরনের কাজেরই ফলাফল মেলে পরের জন্মে।  শুধু তাই নয়, বর্তমান জন্মও প্রভাবিত হয় পূর্বজন্মের কৃতকর্ম দিয়ে। অর্থাত্‍ পরবর্তী জন্মে জন্ম নেওয়ার আগেই, পূর...

ভক্তের মধ্যে ভগবান—এই বাক্যের গভীর অর্থ কি? | ভক্তি ও ঈশ্বরের সম্পর্ক

Image
"ভক্তের মধ্যে ভগবান" কথার অর্থ "ভগবান ভক্তের মধ্যে আছেন।" এই কথার মর্ম সত্য। যখন একজন ভক্ত ভগবানের প্রতি প্রচণ্ড উৎসর্গের সাথে, ভালোবাসা ও আন্তরিকতার সাথে ধ্যান করেন, তখন ভগবান সেই ভক্তের মধ্যে বাস করে থাকেন। হিন্দু দর্শনের একটি মূল নীতিতে পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে: "যেখানে ভক্তি সেখানেই শক্তি।" ভগবত গীতা-তে কৃষ্ণ বলেছেন, "ভক্ত মহ ম প্রিয়হ।" (ভক্তরা আমার কাছে সবচেয়ে প্রিয় এবং আমি আমার ভক্তদের কাছে প্রিয়)। ভগবানের আসন হল তার ভক্তের হৃদয়। সত্যি ভক্তের কর্ম, চিন্তা ও কাজের মধ্যে ভগবানকে উপলব্ধি করা যায়। ভক্তের মধ্যে ভগবান ভগবান কি সত্যিই ভক্তের মধ্যে বাস করেন? ধর্মগ্রন্থের দৃষ্টিতে ব্যাখ্যা: পরমাত্মারুপে ভগবান প্রত্যেক জীবের অন্তরে নিত্য বিরাজমান।  সর্বস্য চাহং হৃদি সন্নিবিষ্টো (গীতা ১৫/১৫) কিন্তু ভগবদবিমুখ ব্যক্তি কখনই তাঁকে জানতে পারে না। মূঢ় ব্যক্তিরা ভগবানকে অবজ্ঞা করে।  অবজানন্তি মাং মূঢ়াঃ (গীতা ৯/ ১১)। ভগবান প্রতি অণু- পরমাণুতেও রয়েছেন,  অণ্ডান্তরস্থ ~পরমাণুচয়ান্তরস্থং(ব্রহ্মসংহিতা) কিন্তু শ্রদ্ধাভক্তি দরকার তাঁকে জানতে হলে । যার মধ্যে ভগ...

পঞ্চ দেবতার পূজা পদ্ধতি ও মন্ত্র সমূহ

Image
পঞ্চ দেবতার পূজা বা ৫ দেবতার পূজা এমনি পূজা,আপনি যে পুজোই করেন না কেন তার আগে বাধ্যতামুলক পঞ্চ দেবতার পূজা করতে হয়। “পঞ্চ দেবতা” শব্দটি হিন্দুধর্মে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা। এটি পাঁচজন প্রধান দেবতাকে বোঝায় যাঁদের পূজা একসাথে বা পৃথকভাবে করা হয়, বিশেষ করে স্মার্ত ধর্মীয় ধারায়।  অনেকেই জানেন না আদি শঙ্করাচার্য এই পূজা পদ্ধতি প্রনয়ন করেছিলেন।আর সেই সময়টায় হিন্দুধর্ম নানাভাবে পিছিয়ে পড়েছিল। শঙ্করাচার্য সেই পিছিয়ে পড়া সনাতনধর্মকে আবার নতুন করে জাগিয়ে তোলার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেন।ভারত তথা বিশ্বে বৌদ্ধধর্ম ও জৈনধর্মের প্রভাব কমতে শুরু করে তাঁর প্রচারকার্যের ফলে। মাত্র বত্রিশ বছর জীবনে তিনি ইহলোক ত্যাগ করে কিন্তু আজও লোকে সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করে তাঁর হিন্দুধর্ম সংস্কারের কথা ।তিনি হারিয়ে যাওয়া বেদান্ত উদ্ধার করেন এবং তিনি সে সকল বেদ-বেদান্তের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ লিপিবদ্ধ করেন।যার ফলে ভারতে বৌদ্ধ দর্শনের বিলোপ ঘটে এবং আবার জেগে উঠে বৈদিক দর্শন তথা হিন্দু/সনাতনের ।আদি শঙ্করাচার্যের আরেকটি বড় অবাদান ছিলো পঞ্চ দেবতার পূজার বিধান করা। যার ফলে হিন্দু সমাজে বিভিন...

পৃথিবী সৃষ্টির মূল কারণ ঈশ্বর নাকি প্রকৃতি

Image
পৃথিবী সৃষ্টির মূল কারণ ঈশ্বর নাকি প্রকৃতি সেটি জানতে হলে আমাদের জানতে হবে পৃথিবী সৃষ্টির কারণ। পৃথিবী সৃষ্টি নিয়ে দুটি প্রধান দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে—একটি হলো ধর্মীয় এবং অপরটি হল বৈজ্ঞানিক ১. ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি:বিভিন্ন ধর্মে ঈশ্বর বা কোনো মহাশক্তির দ্বারা সৃষ্টির ধারণা পাওয়া যায়। ইসলাম, খ্রিস্টধর্ম, ও ইহুদি ধর্ম অনুযায়ী, সৃষ্টিকর্তা (আল্লাহ/গড) বিশ্ব সৃষ্টি করেছেন। হিন্দু ধর্মে ব্রহ্মা, বিষ্ণু, ও মহেশ্বরের ধারণা আছে, যেখানে ব্রহ্মাকে সৃষ্টিকর্তা বলা হয়।অন্যান্য ধর্মেও আলাদা সৃষ্টিতত্ত্ব রয়েছে। ২. বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি বিজ্ঞান অনুসারে, মহাবিশ্বের সৃষ্টি হয়েছিল বিগ ব্যাং (Big Bang) নামক এক মহাবিস্ফোরণের মাধ্যমে। প্রায় ১৩.৮ বিলিয়ন বছর আগে এই ঘটনা ঘটেছিল বলে বিজ্ঞানীরা মনে করেন। মহাবিস্ফোরণের ফলে মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ শুরু হয়, এবং তার থেকেই গ্রহ-নক্ষত্র, গ্যালাক্সি ও পরবর্তীতে পৃথিবী গঠিত হয়।তবে বিজ্ঞানসম্মতভাবে পৃথিবী সৃষ্টির সাথে সনাতন ধর্মের মিল পাওয়া যায় প্রায় ৯৯%। সৃষ্টির মূল কারণ তাহলে আসল উত্তর কী? আপনার দৃষ্টিভঙ্গির ওপর নির্ভর করে উত্তর ভিন্ন হতে পারে। যদি কেউ ধর্মীয় বিশ্বাস...